সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনে নীতি নৈতিকতা সম্পন্ন আদর্শবান নাগরিক প্রয়োজন পার্থিব ও ওহীর জ্ঞানের সমন্বয়ে গঠিত মাদরাসা শিক্ষা: অধ্যক্ষ শাব্বীর আহমদ মোমতাজী

০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
হাফেজ ছাত্রদের দস্তরবন্দী, নাজেরা সবক প্রদান ও পবিত্র কুরআন সবক উপলক্ষ্যে রহমানিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার উদ্যোগে ড. আল্লামা আব্দুর রাজ্জাক আল আযহারীর সভাপতিত্বে আয়োজিত ১৩তম ওয়াজ ও দেয়া মাহফিলে প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত থেকে জমিয়াত মহাসচিব তাঁর বক্তব্যে বলেন, আজ সমাজের প্রতিটি কোণে কোণে অনৈতিকতা বিরাজমান। সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনের যেমনি শিক্ষিত নাগরীক প্রয়োজন, তার থেকেও অধিক প্রয়োজন নীতি নৈতিকতা সম্পন্ন আদর্শবান নাগরিক। আর এই দুয়ের সমন্বয়ে গঠিত দ্বীনি শিক্ষা তথা মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা। একজন মাদরাসা শিক্ষার্থী যেমনিভাবে দাপ্তরিক কার্যাবলী সুষ্ঠভাবে আঞ্জাম দিতে সক্ষম, তদ্রুপ সমাজের অন্যায়, অনাচার, অনৈতিকতা, দুর্নীতি, অরাজকতা, জুলুম, অত্যাচারের মত সকল ধরনের অমানবিক সিস্টেম পরিবর্তন করে শান্তি-শৃঙ্খলাপূর্ণ আদর্শ সমাজ বিনির্মানেও ভূমিকা রাখতে পারে। কেননা মাদরাসা শিক্ষার্থীরা পার্থিব জ্ঞানের পাশাপাশি কুরআন-সুন্নাহ তথা ইলমে ওহী’র জ্ঞান অর্জন করে থাকে।
মহাসচিব বলেন, আমাদের সমাজের মানুষের মাঝে একটি ভুল ধারণা রয়েছে। তারা মনে করে মাদরাসা শিক্ষা নিতান্তই ক্ষীণ শিক্ষা ব্যবস্থা। অনেকেতো মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেই ইতস্তবোধ করেন। কিন্তু কেন? আজ সারাবিশ্ব জয় করছে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। এমন কোন সেক্টর রয়েছে যেখানে মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিতরা অবদান রাখছে না? নিজ সন্তানকে মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারাটা সৌভাগ্যের বিষয়। আগামীতে এমন সময় অপেক্ষা করছে যে, সন্তানকে মাদরাসায় ভর্তি করানোর জন্য অভিভাবকগণ অপেক্ষায় থাকবেন। সমাজে মূল্যায়নের দিক বিবেচনা করলে মাদরাসা শিক্ষার্থীরাই এগিয়ে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
জমিয়াত মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে অন্যদেশ সমূহের না ভাবলেও চলবে। আমাদের দেশে যথেষ্ট মেধাবী ও চৌকস অর্থনীতিবিদ, রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক গবেষক রয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবেশী দেশের সহযোগিতা আমাদের কাম্য নয়। সম্প্রতি ভারতীয় বিভিন্ন উচ্চপদস্থ রাজনীতিবীদগণ সে দেশ থেকে আমাদের দেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণের পরামর্শ দিচ্ছেন। যা নিতান্তই অনধিকার চর্চা বলে আমি মনে করি। অতি উৎসাহী হয়ে ভিন্ন দেশের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের মাধ্যমে তাঁদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার একটি মাধ্যম এটি। তিনি এ বিষয়ে নীতি নির্ধারণী কর্তৃপক্ষকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান।
মাওলানা মাহমুদুল হাসান মাহমূদীর সঞ্চালনায় আয়োজিত মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. আল্লামা খলিলুর রহমান মাদানী, প্রধান বক্তা আল্লামা মঞ্জুরুল ইসরাম আফেন্দি, এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ নসিহত পেশ করেন, আল্লামা আব্দুল্লাহ ইযাহইয়া, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মুফতি হাসান সিদ্দিকী, আল্লামা জোনাইদ কাসেমী, মুফতি আমানুল্লাহ বসন্তপুরী, মুফতি নেয়ামত উল্লাহ প্রমুখ।