দুনিয়া ও আখিরাতে কামিয়াবির জন্য মাদরাসা শিক্ষার বিকল্প নেই: প্রিন্সিপাল শাব্বীর আহমদ মোমতাজী
৩০ মে ২০২৪
সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিতদের থেকে মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিতরা অধীক বিচক্ষণ ও মেধাবী হয়ে থাকে বলে মন্তব্য করেছেন দেশের মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের পেশাজীবী অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ শাব্বীর আহমদ মোমতাজী। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে শুরু করে পারিবারিক জীবনে মাদরাসার শিক্ষার্থীরাই এগিয়ে। দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জাহানের কামিয়াবী নিহিত মাদরাসা শিক্ষা ধারায়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দকে মাদরাসা শিক্ষার গুরুত্ব ও তৎপর্য অনুধাবনে সঠিকভাবে কাউন্সিলিং করলে এ শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি সকলেই উদ্ভুদ্ধ হবে।
গতকাল বুধবার শ্রীপুর উপজেলায় চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষা জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও শ্রীপুর ভাংনাহটি রহমানিয়া কামিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থীদের দোয়া উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
জমিয়াত মহাসচিব শিক্ষার্থীদের মাঝে মাদরাসা শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অনুধাবনের জন্য বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেসকল বিষয়সমূহে পাঠদান করা হয়, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের তার থেকে বেশী বিষয় অধ্যায়ন করতে হয়। তবুও ফলাফলের দিক দিয়ে বরাবরই মাদরাসা শিক্ষার্থীরা এগিয়ে থাকে। নিঃসন্দেহে এটি আল্লাহর রহমত, একই সাথে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের মেধার প্রখরতার প্রমাণ বহন করে।
শাব্বীর আহমদ মোমতাজী বলেন, বর্তমানে শুধু দেশ নয় আন্তর্জাতিক পর্যায়েও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ব্যাপক হারে সফলতা অর্জন করে আসছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধা তালিকার প্রথমাংশ মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দখলে থাকে। এবছর দাখিলের ফলাফল অত্যন্ত সন্তোষজনক। কিন্তু পরিতাপের বিষয় অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের মাঝেই দাখিলের পর কলেজে ভর্তি হওয়ার প্রবনাতা লক্ষ্যনীয়। যা মাদরাসা শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের জন্য অকল্যাণকর। তিনি বলেন, দশটি বছর এক শিক্ষাধারায় অভ্যস্ত থাকার পর হঠাৎ করে শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ধারার শিক্ষা ব্যস্থার সাথে জড়িত হওয়ায় অর্ধিকাংশেরই ফলাফল আশানুরূপ হয় না। অনেকেই হতাশাগ্রস্থ হয়ে অকালে ঝড়ে পড়ে। মাদরাসা থেকে দাখিল পাশের পর আলিমে অধিক অধ্যাবশায়ের ফলে পূর্বের তুলনায় আরো ভাল ফলাফল অর্জন করা সম্ভব, কিন্তু কলেজে গিয়ে সিংহভাগই পূর্বের তুলনায় খারাপ রেজাল্ট করে। এমনকি ইউনিভার্সিটির ফরম ক্রয়ের জন্য যে পয়েন্ট থাকা প্রয়োজন সেটাই অর্জনেও ব্যার্থ হয়।
জমিয়াত মহাসচিব বলেন, বর্তমান মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা যথেষ্ট আধুনিক, সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে মাদরাসা শিক্ষার কোন দূরত্ব নেই। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিসিএস ক্যাডার, আনজীবী, বিজ্ঞানীসহ সকল পেশায় যাতে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা আত্মনিয়োগ করতে পারে সেভাবেই মাদরাসার কারিকুলাম বিন্যাস্ত করা হয়েছে। সর্বপরি দুনিয়া ও আখিরাতে কামিয়াবির জন্য মাদরাসা শিক্ষার বিকল্প কোন শিক্ষা ব্যবস্থা নেই। ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় সম্মানের আসনে আসীন হওয়ার পাশাপাশি চিরস্থায়ী আখিরাতে মুক্তি লাভের নিমিত্তে সন্তানকে মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত করার ব্যাপারে অভিভাবকবৃন্দকে আরো সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। একইসাথে দাখিলপাশ শিক্ষার্থীদের আলিমে ভর্তি হয়ে মাদরাসা শিক্ষা ধারাকে আরো শক্তিশালী ও উজ্জল ভবিষ্যত গঠনের পরামর্শ প্রদান করেন।
শ্রীপুর ভাংনাহাটি রহমানিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ফারুক আহমদ মোমতাজীর সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন- পীর জাদা মাওলানা এসএম রুহুল আমীন, অধ্যক্ষ মাওলানা আতাউল হক, উপাধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ আলী, ড. মাওলানা নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক মজিবুর রহমান, মো. নজরুল ইসলাম মন্ডল প্রমুখ।