প্রধানমন্ত্রীর গৌরবোজ্জ্বল শাসনকালকে কলুষিত করার পাঁয়তারা চলছে: প্রিন্সিপাল শাব্বীর আহমদ মোমতাজী
১৯ মে ২০২৪
অবহেলিত, সুবিধা বঞ্চিত ও কোণঠাসা এবতেদায়ি মাদরাসাসমূহের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে দেশের শিক্ষা ব্যাবস্থাকে বৈষম্যমুক্ত করা সময়ের দাবী বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ শাব্বীর আহমদ মোমতাজী। তিনি বলেন, ২০১১ সালের ২০ এপ্রিল জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের এক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকদের সম্মানী প্রদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার নির্দেশ বাস্তবতার মুখ দেখেনি। শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালের নভেম্বরে এবতেদায়ি মাদরাসা স্থাপন, স্বীকৃতি, পরিচালনা, জনবল কাঠামো ও বেতন-ভাতাদি-অনুদান সংক্রান্ত, নীতিমালা জারি করা হলেও তা কেবল কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। কোন অদৃশ্য বাঁধা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে আটকে দিল তা আজ পর্যন্ত জানা গেল না।
কেনইবা ২০১৮ সালের নীতিমালা বাস্তবতার আড়ালে রয়েছে সেটিও বোধগম্য নয়। আমরা মনেকরি, দ্বীনি শিক্ষা প্রসারের অন্তরায় হিসেবে নেপত্থ্যে কোন শক্তিশালী চক্র কাজ করছে। তারা কেবল ধর্মীয় শিক্ষাকেই নয়, সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রীর গৌরবোজ্জল শাসনকালকে কলুষিত করার পায়তারা করছে। গতকাল শনিবার দেশের মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের পেশাজীবী অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন শরিয়তপুর জেলা শাখা আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সংগঠনের কেদ্রীয় মহাসচিব এসব কথা বলেন। শাব্বীর আহমদ মোমতাজী বলেন, এবতেদায়ি নীতিমালা বাস্তবায়নে সরকারী কোষাগার থেকে অতিরিক্ত কোন অর্থ ব্যায় হবে না জেনেও নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষ চুপ কেন? আমরা আশাবাদী অচিরেই প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি সুরাহা করে, তাঁর জনপ্রিয়তা অক্ষুন্ন রাখবেন।
জমিয়াত মহাসচিব বলেন, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী মাদরাসা শিক্ষার ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক। তিনি মন্ত্রণালয়ের দায়ীত্ব প্রাপ্তির পরপরই জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সাথে বৈঠকে মিলিত হয়ে মাদরাসা শিক্ষায় বিদ্যমান সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে মতবিনিময়ের মাধ্যমে তা সমাধানের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেছেন। জমিয়াতুল মোদার্রেছীন আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীনের নেতৃত্বে মাদরাসা শিক্ষার অধিকার আদায়ের প্রত্যয় নিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছে। মতবিনিময় সভায় জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের সমন্বয়কের দায়ীত্ব পালনের জন্য জেলা সেক্রেটারী অধ্যক্ষ মাওলানা মিজানুর রহমানকে নিযুক্ত করে বিভ্রান্তি ছড়ানো ব্যাক্তিদের থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা আবু জাফর মো. ছাদেক হাসান বলেন, জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কেবল মাদরাসা শিক্ষকদের সংগঠন নয়। আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, ইসলামিক স্কলার, লেখক, গবেষকদের মিলন কেন্দ্র এ সংগঠন। আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি ঐক্য। সিসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারী, আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখগণ জমিয়াতের পতাকা তলে অনড় অবস্থানে রয়েছে। সম্প্রতি কিছু স্বার্থান্বেষী, পরশ্রিকাতর ব্যাক্তি জমিয়াতের ঐক্য বিনষ্টের অপচেষ্টা করছে। তাদের হীন চক্রান্ত কখনই বাস্তবায়ন হবে না। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এপর্যন্ত জমিয়াত যতবার সংকটের মুখোমুখী হয়েছে ততবারই আমরা আরো বেশী ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী হয়েছি। ছারছীনা, ফুলতলী, চরমোনাই, মৌকারা, নেছারাবাদ’সহ সকল হক্কানী পীর মাশায়েখদের দুয়া ও সুদৃষ্টির স্থল ঠুনকো ঝড়-ঝাপটায় কখনই হেলে পড়বে না। মফস্বল থেকে মহানগর প্রত্যেক স্থানেই আমাদের সুদক্ষ ও চৌকশ নেতৃবৃন্দ সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীনের হাতকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে জমিয়াতকে আরো সুসংগঠিত করণে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি সর্বস্তরের জমিয়াত নেতৃবৃন্দকে এসকল হীনস্বার্থ চরিতার্থকারীদের থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
স্বাগত বক্তব্যে শরিয়তপুর জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা মো. মিজানুর রহমান বলেন, শরিয়তপুর জেলার সকল মাদরাসা জমিয়াতের পতাকা তলে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। সংগঠনের যেকোন প্রয়োজনে আমরা অগ্রণী ভুমিকা পালন করে এসেছি, ভবিষ্যতেও করবো ইনশাআল্লাহ।
শরিয়তপুর জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা তছলিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মুফতী মাওলানা মো. মোহসীনের সঞ্চালনায় এবং ডামুড্যা হামিদীয়া কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা জহিরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- মাদারীপুর জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা আবু রাফে মো. ফেরদাউস, শরিয়তপুর জেলা জমিয়াত নেতা অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুর রব হাশেমী, অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আনোয়ার হোসাইন, অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুল্লাহ, সুপার মাওলানা মো. মারুজ্জামান, উপাধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল বাতেন, অধ্যক্ষ মাওলানা ফখরুল ইসলাম আনসারী, অধ্যক্ষ মাওলানা বশির উদ্দীন প্রমুখ। এসময় শরিয়তপুর জেলা শাখার সকল নেতৃবৃন্দ, উপজেলা সভাপতি, সেক্রেটারিসহ সর্বস্তরের মাদরাসা শিক্ষক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।