স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকসহ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ করুণ
১৩ জুলাই ২০২৩
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো আধুনিক, যুগোপযুগি, ডিজিটালাইজেশন ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করণে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণের বিকল্প নেই। একই সাথে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা স্থাপন, স্বীকৃতি, পরিচালনা, জনবল কাঠামো ও বেতন-ভাতাদী/অনুদান সংক্রান্ত জটিলতাসমূহ নিরসনের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় বেতন-ভাতাসহ সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে মাদরাসা শিক্ষা ধারার ফিডার ক্লাসসমূহের মজবুত ভিত্তি স্থাপন অতিব জরুরি। দেশের মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের পেশাজীবী অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কর্তৃক আয়োজিত মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দের এসব কথা বলেন।
গত মঙ্গলবার সংগঠনের কেন্দ্রীয় দফতরে মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজীর সভাপতিত্বে ঢাকা বিভাগীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বলেন, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের সর্বস্তরে উন্নয়ন সাধন হচ্ছে। প্রতিবছরই বাজেটের একটি বিরাট অংশ শিক্ষা খ্যাতে উত্থাপিত হলেও বেসরকারি শিক্ষা, বিশেষ করে মাদরাসা শিক্ষার সুফল অনেকাংশেই কম ভোগ করছে। এর ধারা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে মাদরাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণ এ শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ক্রমশ আগ্রহ হারাবে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ মাদরাসা শিক্ষা। যেখানে দেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী নিয়মিত অধ্যায়ন করছে এবং দেশে ও বিদেশে তারা সুনাম ও সুখ্যাতির সাথে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু এ শিক্ষার্থী গড়ার কারিগর তথা শিক্ষক-কর্মচারীগণ এখনও সুযোগ-সুবিধার দিক দিয়ে অনেকাংশেই বঞ্চিত। তাই দেশের বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ টিকিয়ে রাখা বিশেষ করে মাদরাসা শিক্ষা ধারারকে আরো আধুনিক, যুগোপযুগি, ডিজিটালাইজেশন ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করণে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণের পাশাপাশি সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদানের বিকল্প নেই। একই সাথে ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৫টি শ্রেণির সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত প্রায় ১৮ হাজার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা অনুমোদিত থাকলেও পূর্বে উক্ত মাদরাসা পরিচালনার নির্দিষ্ট কোন নীতিমালা না থাকায় এবং কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীগণ সরকারি বেতন-ভাতা না পাওয়ায় অনেক স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এ সকল সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারীদের উপযুক্ত সম্মানী প্রদানের আশ্বাস পেলেও তা বাস্তবতার মুখ দেখেনি। সর্বশেষ ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা স্থাপন, স্বীকৃতি, পরিচালনা, জনবল কাঠামো ও বেতন-ভাতা/অনুদান সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করা হলেও বস্তবায়নের শৈথিল্যতার কারণে এখনও তার সুফল কোন মাদরাসা, শিক্ষক-কর্মচারী ভোগ করতে পারছে না। ফলশ্রুতিতে ক্রমান্বয়ে মাদরাসার ইবতেদায়ী স্তরে শিক্ষার্থী সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে এবং শিক্ষকগণ পাঠদানের আগ্রহ হারাচ্ছে। তাই মাদরাসা শিক্ষাকে টিকিয়ে রাখতে, এ শিক্ষার মানউন্নত করার লক্ষ্যে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার জন্য প্রণীত নীতিমালা ২০১৮ দ্রুত বাস্তবায়ন করে অতিসত্বর কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীগণকে সরকারি বেতন স্কেলের অন্তর্ভূক্ত করা অতিব জরুরি। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী নীতিমালা বাস্তবায়নে নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষামন্ত্রণালায় এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর জমিয়াত সহ-সভাপতি প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা নজরুল ইসলাম আল-মারুফ, প্রিন্সিপাল মাওলানা রেজাউল হক, প্রিন্সিপাল মাওলানা বদিউল আলম সরকার, ঢাকা মহানগর জমিয়াত সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা আবু জাফর মো. ছাদেক হাসান, নরসিংদী জেলা সভাপতি প্রিন্সিপাল আব্দুল জলিল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক প্রিন্সিপাল মো. আবু রায়হান ভূঁইয়া, গাজীপুর জেলা সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা জহিরুল হক, গাজীপুর মহানগর সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল মুহাম্মদ রাকিবুল হাসান, নারায়নগঞ্জ জেলা সভাপতি প্রিন্সিপাল আ ন ম বোরহান উদ্দীন, সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল মুহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ, মানিকগঞ্জ জেলা সভাপতি প্রিন্সিপাল মুহাম্মাদ আতিকুর রহমান, মুন্সিগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ আবু জাফর, টাঙ্গাইল জেলা সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল মো. জাহিদুল ইসলাম, স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মো. লোকমান শেখ প্রমুখ।