শ্রীপুরে শিক্ষক-কর্মচারী মিলনমেলা
সুকৌশলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের চμান্ত চলছে বহুকাল পূর্ব থেকেই। প্রিয় নবী (স.) আমাদের দেশ প্রেম শিখিয়েছেন। তার আদর্শকে হৃদয়ে লালন করে আমাদেরও দেশ প্রেমি হতে হবে। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি সুশৃঙ্খল ও সুষ্ঠ সমাজ উপহার দেয়ায় সর্বোচ্চ ভুমিকা রাখতে পারে আমাদের শিক্ষকগণ। শিক্ষকরা কখনই অবসরে যেতে পারে না। কর্মক্ষেত্র থেকে অবসর নিলেও বাস্তব জীবনে সর্বস্তরে তারা শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে দায়িত্ব পালন করে যায়। গতকাল গাজীপুর জেলাধীন শ্রীপুর উপজেলার সকল মাধ্যমিক স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী মিলনমেলা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে স্থানীয় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ এসব কথা বলেন।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তারিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ শিক্ষক-কর্মচারী মিলনমেলায় মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি আরো বলেন, দেশ ও জাতি গড়ার কারিগর শিক্ষকগণ। তাদের সম্মান সবার উপরে। চাইলে তারা অন্য পেশা বেছে নিতে পারতেন। কিন্তু এই মহান মানবগণ জাতীকে শিক্ষিত, সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন কেবল এদেশকে হৃদয়ে ধারণ করার জন্য, দেশের মানুষকে উজ্জল একটি ভবিষ্যৎ উপহার দেয়ার জন্য। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দিকথেকে বিবেচনা করলে এখানে অনেকেই আমার ভিনড়ব মতের হতে পারেন কিন্তু আমার নিকট আপনারা কেবল শিক্ষক। তাই আপনাদের অবস্থান আমার হৃদয়ে ছিল আছে এবং থাকবে।
অনুষ্ঠানে উপজেলার বেশকয়েকজন প্রবীন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে সংবর্ধনা ও সম্মানা স্মারক প্রদান করা হয়। এসময় দেশের মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের পেশাজীবী অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব ও শ্রীপুর ভাংনাহাটি রহমানীয় কামিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করে তার বক্তব্যে এমন একটি সৌন্দর্য্যমন্ডিত শিক্ষক-কর্মচারী মিলনমেলার আয়োজন করায় আয়োজক কমিটির সকল কর্মকর্তাগণকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা শিক্ষকদের সমন্বয়ে এই ধরণের মিলন মেলা ইতিহাসে বিরল। এ অনুষ্ঠান দেশে নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে আমি মনে করি। এদেশের মাদারাসা শিক্ষা ধারা একসময় ছিল অবহেলিত। গুটি কয়েক শিক্ষক-কর্মচারী নামেমাত্র কিছু বেতন পেত, বাকীরা বঞ্চিত হতো সকল কিছু থেকে। মাদরাসার জন্য আলাদা কোন অধিদফতর ছিল না। মন্ত্রণালয়ে মাদরাসার জন্য ভিনড়ব কোন বিভাগ ছিল না। জাতীয় বেতন স্কেলের বাইরে ছিল মাদরাসা শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন। ফাযিল, কামিল মাদরাসাসমূহের কার্যμম পরিচালিত হতো ভিনড়ব ধারার বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা। মোটকথা সর্বদিক থেকে মাদরাসা শিক্ষা, শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ছিল। কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় আমাদের সকল চাওয়া পুরোন হয়েছে। আলেম ওলামাদের শতবছরের প্রানের দাবি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর প্রতিষ্ঠা, মন্ত্রণালয়ে মাদরাসার জন্য আলাদা বিভাগ সৃষ্টি, জাতীয় বেতন স্কেলে মাদরাসাসহ সকল বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্তি, উপবৃত্তিসহ নানাবিধ সুবিধা দিয়ে মাদরাসা শিক্ষা উনড়বয়ে প্রধানমন্ত্রী যে ভুমিকা রেখেছেন তা আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণে রাখবো আজীবন।
শিক্ষক-কর্মচারী মিলনমেলায় প্রায় দুই হাজার নারী ও পুরুষ শিক্ষক-কর্মচারী সতস্ফুর্ত অংশনেয়। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সামছুল আলম প্রধান, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. হুমায়ন কবীর হিমু, উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মো. মাহতাব উদ্দীন, শ্রীপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ এ এফ এম নাসিম, জেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা খানম, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট হারুন-অর-রশিদ ফরিদ, উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান লুৎফুনড়বাহার মেজবাহ্, শ্রীপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজুল হক প্রমুখ।