দেশের অর্থনৈতিক সংকটে বিপন্ন মানুষের পাশে বিত্তবানদের দাঁড়াতে হবে : এ এম এম বাহাউদ্দীন
৪ ডিসেম্বর, ২০২২ মো. দেলোয়ার হোসেন, গাজীপুর থেকে বর্তমানে মানুষ চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে রয়েছে মন্তব্য বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেছেন, দেশের সম্পদশালীদের মৃত্যু হলে কবরে কিছুই নিয়ে যেতে পারবেন না। এ চিন্তা করে সবার উচিত আর্থিক সংকটে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানো। গতকাল শনিবার গাজীপুর সদর উপজেলার হোতাপাড়া এলাকায় শামছাবাদ দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম পীর ছাহেব প্রিন্সিপাল মাওলানা শামসুল হক (রহ.) এর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী ঈসালে সাওয়াব ও ১৪তম বার্ষিক তালিমী মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, দেশ-বিদেশে যারা এক সময় হাজার হাজার কোটি কোটি টাকা ও সোনা দানার মালিক ছিলেন; তারা সব ফেলে আজ অন্ধকার কবরের শুয়ে আছেন। এটাই বাস্তবতা। এসব কথা স্মরণ করে আমাদের ভালো কাজ করতে হবে। সমাজ ও মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। বর্তমানে বিশ্ব এক অশান্তির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে হাজার হাজার মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হচ্ছে। এ অবস্থায় মানুষকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।
শামছাবাদ দরবার শরীফের পীর ছাহেব আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে তিন দিনব্যাপী মাহফিলের প্রথম দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব আলহাজ্ব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী। ওয়াজ করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রখ্যাত প্রবীন ওয়ায়েজ পীরজাদা আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী, ঢাকা গুলশান ইউনাইটেড সিটি মসজিদুল মোস্তফা (সা.) মাদানী অ্যাভিনিউর খতিব আলহাজ্ব হযরত মাওলানা ছালিমুর রহমান আযহারী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ এম এম বাহাউদ্দিন বলেন, আমাদের (মানুষ) আরো মানবিক হতে হবে। অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল মানুষের পাশে সম্পদশালীদের দাঁড়াতে হবে। অলি-আউলিয়াদের পথ অনুসরণ করতে হবে। সকলকে একদিন মরতে হবে। আমাদের মনের রাখতে হবে ধনসম্পদ নিয়ে কেউ কররে যাবেন না। বাংলাদেশ তো বটেই; বিশ্বের অনেক সম্পদশালী দেশের সম্পদশালী মানুষকে সব দুনিয়ায় সব রেখে অন্ধকারে কবরে যেতে হয়েছে। এসব কথা স্মরণ করে প্রতিদিন আমাদের ভালো কাজ করতে হবে। সমাজ ও মানুষের উন্নয়ন এবং কল্যাণে কাজ করতে হবে। তবে ইসলাম বিদ্বেষীদের প্রশ্রয় দেয়া যাবে না; তাদের রক্তচক্ষুকে ভয় করে বসে থাকা যাবে না।
প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, অপ্রিয় হলেও সত্য যে, বর্তমানে দেশের মানুষ চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে দিনযাপন করছেন। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির সঙ্গে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত মানুষ কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায় ক্রয় ক্ষমতা না থাকায় মানুষ দিনের খাবার কমিয়ে দিয়েছে। প্রত্যাহিক জীবনের ব্যয় কাঁটছাট করতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ ব্যাংক থেকে দুর্নীতিবাজরা হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন; নানা প্রক্রিয়ায় সে টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে।
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, এ যুদ্ধ পশ্চিমাদের চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ। যুদ্ধ শুধু মানুষের জীবনই কেড়ে নেয় না অনেক কিছু ধ্বংস করে দেয়। বাংলাদেশকে অলি-আউলিয়াদের দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ দেশে শত শত অলি আউলিয়া ঘুমিয়ে রয়েছেন। অলি-আউলিয়ার এই দেশে ইসলামের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র সফল হবে না। এ দেশের মুসলমানরা অতীতে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সহ্য করেনি ভবিষ্যতেও করবে না। তবে আলেমদের ব্যাক্তিগত লোভ-লালসার উর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা শাব্বির আহমেদ মোমতাজী বলেন, শামছাবাদ দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মাওলানা শামছুল হক একজন পীরে কামিল ছিলেন। ইসলামের জন্য তিনি নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় মসজিদ মাদরাসা নির্মাণ করেছেন।